![]() |
| অতিরিক্ত চা পানে হতে পারে ক্যান্সার |
চা অনেকের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সকালে ঘুম ভাঙাতে, বিকেলে ক্লান্তি দূর করতে কিংবা অতিথি আপ্যায়নে – এক কাপ চা যেন অপরিহার্য। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত চা পান শরীরের স্বাস্থ্য জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। ডা. চক্রবর্তী বলেন, গরম চা খাদ্যনালিতে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। আর শুধু গরম চা বা কফি নয়, যে কোনো ধরনের পানীয় অতিরিক্ত গরম অবস্থায় পান করলে তা আমাদের খাদ্যনালির অভ্যন্তরের আস্তরণের মারাত্মক ক্ষতি করে। ফলে খাদ্যনালির কোষগুলো ক্রমাগতভাবে নতুন করে জন্মানোর প্রয়োজন হয়। ক্যান্সারের গবেষণার আন্তর্জাতিক সংস্থার (আইএআরসি) রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৪৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি গরম পানীয় লেভেল ২এ কার্সিনোজেনের সমতুল্য ক্ষতিকর, যা ক্যান্সারের অন্যতম কারণ।
অতিরিক্ত চা পানের ক্ষতিকর দিক:
১. উচ্চ তাপমাত্রার চা:
গবেষণায় জানা গেছে, খুব গরম অবস্থায় চা পান করলে খাদ্যনালীর কোষে ক্ষতি হতে পারে। বারবার এভাবে কোষ নষ্ট হলে দীর্ঘমেয়াদে খাদ্যনালীর ক্যান্সার (esophageal cancer) হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
২. ট্যানিনের অতিরিক্ততা:
চায়ে থাকা ট্যানিন নামের যৌগ আয়রন ও কিছু খনিজের শোষণ কমিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন অতিরিক্ত ট্যানিন গ্রহণে শরীরে পুষ্টিহীনতা দেখা দিতে পারে, যা ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের পেছনে ভূমিকা রাখে।
৩. ক্যাফেইনের প্রভাব:
অতিরিক্ত চায়ে থাকা ক্যাফেইন ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়, উদ্বেগ বাড়ায় ও হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। এসব সমস্যা পরোক্ষে হরমোন–নির্ভর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
৪. দুধ ও চা একসঙ্গে:
অনেকে চায়ে দুধ মিশিয়ে পান করেন। কিন্তু দুধের প্রোটিন চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপকারিতা নষ্ট করে দেয়। ফলে শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যাল বেড়ে গিয়ে কোষ ক্ষয় ও ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়।
কতটা চা নিরাপদ
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে ২ থেকে ৩ কাপ চা পরিমাণমতো পান করা নিরাপদ। তবে চা ঠান্ডা বা কুসুম গরম অবস্থায় পান করা উত্তম। খুব গরম চা একদম এড়িয়ে চলা উচিত।
বিকল্প ও ভালো অভ্যাস
-
হারবাল বা গ্রিন টি বেছে নিতে পারেন, এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি থাকে।
-
প্রতিবার চা পানের মধ্যে পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
-
ঘুমের আগে চা না খাওয়াই ভালো।
উপসংহার:
চা যেমন উপভোগ্য, তেমনি মাত্রার বাইরে গেলে তা বিপজ্জনকও হতে পারে। অতিরিক্ত বা খুব গরম চা পান ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, তাই সচেতনভাবে পরিমিত চা পান করাই স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের চাবিকাঠি।
